আমাদের সমাজে প্রচলিত বিবাহের পাশাপাশি আরেক ধরণের বিবাহ চালু আছে। আমরা এটাকে কোর্ট ম্যারেজ বলে অভিহিত করে থাকি। কিন্তু এই কোর্ট ম্যারেজ আসলে কি? প্রথমেই আমাদের কোর্ট ম্যারেজ সম্পর্কে প্রচলিত ভুল ধারণা শুধরে নেওয়া প্রয়োজন।কোর্ট ম্যারেজ বলতে আসলে কোন ম্যারেজ নেই। আদালত কাউকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করিয়ে দেন না। বা আদালত এসব বিবাহ বন্ধনে কোনরূপ হস্তক্ষেপ করেন না। তাহলে এটাকে আমরা কোর্ট ম্যারেজ বলি কেন? আসলে এটা হলো একটা প্রথাগত ভুল ধারণা। অনেক ছেলে মেয়ে আসেন আদালতে কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য।সত্যি বলতে কি তারা আদালতে আসেন না বরং আদালত পাড়ায় এসে আইনজীবীর সাথে আলাপ আলোচনা করে থাকেন।
আইনজীবীর নিকট আসার পর কি হয়
কোন বিবাহ যোগ্য নারী পুরুষ কোন আইনজীবীর নিকট এসে তারা বিবাহ বন্ধণে আবদ্ধ হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করলে বিবাহের কাজ কর্ম শুরু হয়। আদালত পাড়ায় সরকার অনুমোদিত কাজী রয়েছে। আইনজীবীবৃন্দ এ রকম একটি কাজীকে নিজ চেম্বারে ডেকে পাঠান।
ঐ কাজী আসলে স্বাভাবিক নিয়মে ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক বা অন্য ধর্ম হলে অন্য ধর্মের নিয়ম কানুন মেনে বিবাহের কাজ সম্পন্ন করা হয় এবং স্বাভাবিক বিয়ের মতই এক সপ্তাহ পরে বিয়ের রেজিষ্ট্রিকৃত কাবিন নামা দেওয়া হয়। তবে আইনজীবীর চেম্বারে বিবাহ সম্পন্ন হলে আরেকটি ডকুমেন্ট দেওয়া হয় নব দম্পত্তিকে। সেটি হলো বিবাহের হলফনামা বা এফিডেভিট।
এই হলফনামার মাধ্যমে নব দম্পত্তি ঘোষণা করেন যে তারা স্বেচ্ছায় স্বজ্ঞানে দুজন দুজনকে পরস্পর ভালবেসে অন্যের বিনা প্ররোচনায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। এই হলফনামা বিবাহের কোন শর্ত নয়। এই হলফনামা না নিলে বিবাহের কোন ক্ষতি হবে এমনটি নয়।তবে বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখা যায় অধিকাংশ নব দম্পত্তি পালিয়ে এসে বা বাবা মায়ের অমতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। পরবর্তীতে মেয়ের বাবা মা তাদের মেয়েকে অপহরণের দায়ে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে বসেন। এক্ষেত্রে মেয়েটি বাবা মায়ের সান্নিধ্যে গেলে ছেলের বিপক্ষে কথা বলে থাকেন। ফলে ছেলেটি ফেসে যান মিথ্যা মামলায়। ছেলেটির পক্ষে এটা প্রমাণ করা সম্ভব হয় না যে মেয়েটি স্বেচ্ছায় তাকে বিয়ে করেছেন। আর এজন্যই প্রমাণ স্বরূপ একটি হলফনামা করিয়ে দেওয়া হয় যাতে করে এটা বোঝা যায় যে মেয়েটি ছেলেটিকে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছিল এবং ছেলেটি মেয়েটি অপহরণ করেননি।
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন মন্তব্যের ঘরে
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন মন্তব্যের ঘরে