থানায় মামলা না নিলে করণীয়

আমাদের সাথে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে আমরা প্রতিকারের জন্য থানায় যায় মামলা করতে। শুধু নিজের সাথে অপরাধ হলেই যে থানায় যেতে হবে বা থানা কর্তৃপক্ষকে উক্ত অপরাধ সম্পর্কে অবহিত করতে হবে এমনটি নয়। বরং আমাদের সামনে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে উক্ত অপরাধের সংবাদ নিকটবর্তী কোন ম্যাজিষ্ট্রেট বা পুলিশ অফিসারকে জানাতে হবে। কারণ অপরাধের সংবাদ জানাতে আমরা আইনত বাধ্য। (ফৌজদারী কার্যবিধির ধারা ৪৪ (১) দ্রষ্টব্য)। থানায় এজাহারের মাধ্যমে অপরাধের বিস্তারিত বিবরণ জানাতে হয় এজাহারের মাধ্যমে। যেটিকে আমরা থানায় মামলা দায়ের করা হিসেবে জানি। থানায় মামলা দায়ের হলে থানা কর্তৃপক্ষ চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে মামলার নথি সংশ্লিষ্ট ম্যাজিষ্ট্রেট এর বরাবর পাঠিয়ে দেন। অপরাধ টি আমলযোগ্য হলে থানা কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে ম্যাজিষ্ট্রেটের লিখিত আদেশ ছাড়াই তদন্ত শুরু করেন। আদালতে মামলার নথি পাঠানোর পর আদালতের জি আর শাখায় রক্ষিত জেনারেল রেজিষ্ট্রারে মামলাটি উঠানো হয়। এ ক্ষেত্রে মামলার একটি নম্বর পড়ে যেটিকে জি আর বলা হয়। আর ফাস্ট ইনফরমেশন রিপোর্টে বা এফ আই আর- এ থাকে থানার মামলা নম্বর যেটিকে পুলিশ স্টেশন কেস বলা হয়।
থানায় দায়ের করা মামলা জি আর হিসেবে পরিচিত। থানায় মামলা দায়ের করলে এজাহারকারী বা বাদীর পুলিশ রিপোর্ট দাখিলের আগ পর্যন্ত কোন কাজ থাকে না। যা করার পুলিশই করে থাকে।


মামলাটি তদন্ত সম্পন্ন হওয়ার পর তদন্তকারী কর্মকর্তা রিপোর্ট দেন বিজ্ঞ আদালতে। এই রিপোর্ট ফাইনাল রিপোর্টও হতে পারে আবার চার্জশীটও হতে পারে। ফাইনাল রিপোর্ট মানে আসামীদের বিরুদ্ধে অপরাধটি প্রমাণিত হয়নি। আর চার্জশীট দাখিল করা হয় আসামীর বিরুদ্ধে অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলে। আমাদের সাথে কোন অপরাধ সংঘটিত হলে আমরা প্রতিকারের জন্য থানায় যায় মামলা করতে।

যাইহোক, যদিও থানায় এজাহার নিয়ে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ মামলা দায়ের করতে বাধ্য। কিন্ত অনেক সময় দেখা যায় থানা কর্তৃপক্ষ অজ্ঞাত কারণে এজাহারটি নিচ্ছেন না। এমতাবস্থায় থানায় মামলা দায়ের করা সম্ভব হয় না।


থানা কর্তৃপক্ষ যদি মামলা না নেন তাহলে বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে। সেটি হলো আদালতে মামলা দায়ের করা। পুলিশের নিকট মামলা দায়ের করতে কোন আইনজীবীর দরকার না হলেও আদালতে মামলা দায়ের করতে হলে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয়। আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হলে আদালত বাদীকে ফৌজদারী কার্যবিধির ২০০ ধারা মোতাবেক পরীক্ষা করেন। অর্থ্যাৎ বাদীর জবানবন্দী নেওয়া হয়। জবানবন্দী নেওয়ার পর আদালত সন্তুষ্ট হলে ফৌজদারী কার্যবিধির ১৯০ (১) ধারা মোতাবেক অপরাধটি সরাসরি আমলে নিয়ে আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা অথবা সমন ইস্যু করতে পারেন। আবার আদালত চাইলে অপরাধটি সরাসরি আমলে না নিয়ে তিনি নিজেই বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে পারেন অথবা তাঁর অধীনস্ত কোন ম্যাজিষ্ট্রেট কে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিতে পারেন অথবা তদন্তের জন্য থানা কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোন উপযুক্ত ব্যক্তিকে নির্দেশ দিতে পারেন। আবার আদালতের নিকট যদি প্রতিয়মান হয় যে মামলায় সামনে অগ্রসর হওয়ার মত তেমন কোন ভিত্তি নেই তাহলে তিনি কারণ লিপিবদ্ধ করে অভিযোগটি খারিজ করতে পারেন। আদালতে মামলা দায়ের হলে মামলা সংক্ষিপ্ত বিবরণ আদালতে রক্ষিত কমপ্রেইন্ট রেজিষ্ট্রারে লেখা হয় এবং একটি নম্বর পড়ে যেটিকে সি. আর নম্বর বলে। এজন্য আদালতে দায়েরকৃত মামলাটিকে সি আর মামলা বলা হয়। থানায় বা আদালতে যেখানেই মামলা দায়ের করা হোক না কেন মামলা প্রমাণের জন্য বাদীকেই পদক্ষেপ নিতে হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.