১৩৮ ধারার মামলায় আসামীর মৃত্যু হলে টাকা আদায়ের উপায়

যদিও হস্তান্তরযোগ্য দলিল আইনের ১৩৮ ধারায় প্রতারক চেকদাতাকে শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে কিন্তু আমরা শুধুমাত্র আসামীকে শাস্তি দেওয়ার জন্যই ঐ ধারায় মামলা করিনা বরং আমাদের পাওনা টাকা আদায়ের একটি অস্ত্র হিসেবে ১৩৮ ধারাকে ব্যবহার করে থাকি। পাওনা টাকা আদায়ের জন্য সাধারণত দেওয়ানী মামলা করতে হয়। কিন্তু শুধুমাত্র চেকের মামলায় দেওয়ানী ও ফৌজদারী উভয় আইনেই টাকা আদায়ের বিধান রয়েছে। আসামীর শাস্তি নিশ্চিত করা যতটানা কাম্য হয়ে তার চেয়ে বেশি উৎসাহ বা আগ্রহ থাকে আসামীর নিকট থেকে পাওনা টাকা আদায়ের। আগেভাগেই জেনে নেওয়া ভাল যে, যিনি অপরাধ করবেন সেই অপরাধের দায় শুধুমাত্র তার উপরই বর্তাবে। এই দায় কখনোই অপরের উপর বর্তাই না। মামলা চলাকালীন সময়ে আসামীর মৃত্যু ঘটতে পারে এটা অস্বাভাবিক কিছুই নয়। কিন্তু বাদী তো তার পাওনা টাকা আদায়ের জন্য আসামীর বিরুদ্ধে ১৩৮ ধারায় মামলা করে থাকেন। এই আসামীই যদি মারা যায় তাহলে টাকা আদায়ের উপায় কি হবে?

মামলা দায়ের করার আগেই যদি চেক দাতার মৃত্যু হয়ে যায় তাহলে চেক গ্রহীতার প্রতিকার পাওয়ার আর কোন উপায় থাকে না। এমনকি মামলা চলমান অবস্থায় যদি আসামী মারা যায় তাহলে তার উত্তরাধীকারী বা আইনগত তিনিধির বিরুদ্ধে নালিশী দরখাস্ত সংশোধন করে কোন প্রতিকার পাওয়া যায় না।মামলা দায়ের এর পূর্বে বা পরে যখনই আসামী মারা যাক না কেন উভয় ক্ষেত্রেই বাদীর প্রতিকার হলো মৃত ব্যক্তির উত্তরাধীকারী বা আইনগত প্রতিনিধির বিরুদ্ধে দেওয়ানী আদালতে টাকা আদায়ের মোকদ্দমা দায়ের করে ঐ টাকা আদায়ের ব্যবস্থা করা। এ প্রসঙ্গে নীনা চোপরা বনাম মহেন্দ্র সিং [(২০১২) বিসি ৪২০ (এমপি)] মামলায় মধ্য প্রদেশ হাইকোর্ট  এই অভিমত ব্যক্ত করেন যে, 
১৩৮ ধারা পড়ে এটা স্পষ্ট হয় যে,  চেক গ্রহীতা ঐ ব্যক্তির বিরুদ্ধেই শুধুমাত্র ১৩৮ ধারায় মামলা দায়ের করতে পারেন যে ব্যক্তি তর্কিত চেকটি ‍ইস্যু করেছেন এবং চেকটি অপর্যাপ্ত তহবিল মর্মে ফেরত এসেছে। ফৌজদারী দায় কোনভাবেই চেকদাতার উত্তরাধীকারী বা আইনগত প্রতিনিধির বরাবর হস্তান্তরিত হয় না। 
কাজেই উপরোক্ত আলোচনা হতে এটা স্পষ্ট যে, মামলা চলমান অবস্থায় কোন আসামী মারা গেলে ঐ মামলা তার বিরুদ্ধে ঐখানেই শেষ হয়ে যাবে। তার উত্তরাধীকারীদের বিরুদ্ধে আর চলবে না। এক্ষেত্রে চেক গ্রহীতা টাকা আদায় করতে চাইলে তাকে দেওয়ানী আদালতে টাকা আদায়ের মামলা দায়ের করা ছাড়া অন্য কোন উপায় নেয়।


আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন মন্তব্যের ঘরে

৭টি মন্তব্য

  1. ধন্যবাদ বর্তমানে আমি এই সমস্য পড়েছি। আপনার লেখাটি আমার পড়ে আমার অনেক চিন্তা দুরহলো।
    1. আপনাকেও ধন্যবাদ। আপনার আইনি কোন পরামর্শের দরকার হলে আমাদের “প্রশ্ন করুন” বিভাগে প্রশ্ন করতে পারেন। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করবো আপনার সমস্যার সমাধান দিতে।
  2. আমার আসামী সাজা কাটাতেছে কিন্তু টাকা দেওয়ার ইচ্ছা নেই এখন কি করণীয়?
  3. ধন্যবাদ। আপনি মানি সুট দায়ের করতে পারেন অথবা সরকার পিডি আর আইনে মামলা করে৷ আসামীর নিকট থেকে টাকা আদায় না করা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন।
  4. স্যার, আমার বাবার বিরুদ্ধে এমন একটি মামালা করা হয়েছিল। আমার বাবা যখন অসুস্থ ছিল তখন মামলাটি করা হয়েছিল।। এবং ৬ মাস আগে আমার বাবা মারা যায় এখন কি এই দায় আমাদের উপড় পরবে???
  5. ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য। আপনি পোস্টটি ভাল করে পড়ুন। উত্তর পেয়ে যাবেন।
  6. দেওয়ানি আদালতে কোন আইনের কত ধারায় কিভাবে মামলানকরতে হইবে আসামি মারা গেলে তা লিখুন।
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.