স্ত্রী সম্পদশালী হলেও কি স্বামীর নিকট থেকে ভরণপোষণ পাবেন?

ভরণপোষণ বলতে ইসলামি আইনে খাদ্য, বস্ত্র এবং আশ্রয় কেই বোঝায়। ভরণপোষণ বা খোরপোষের জন্য স্ত্রী ও নাবালক সন্তানের পক্ষে পারিবারিক আদালতে আবেদন করা হয়। ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ আমলে আসার আগে ভরণপোষণ এর জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৮৮ ধারা বিধান অনুযায়ী ফৌজদারি আদালতে মামলা দায়ের করা হত।
স্বামী যদি সংগত কারণ ব্যতিরেকে স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে অস্বীকার করে তাহলে স্ত্রী তার জন্য পারিবারিক আদালতে মামলা করতে পারে। স্ত্রী সর্বাবস্থায় স্বামীর নিকট থেকে ভরণপোষণ পেতে হকদার। স্ত্রী নিজে যতই ধনী হোক না কেন তাতে তার অধিকার খর্ব হয় না। স্বামী যতই গরীব হোক না কেন স্ত্রীর অধিকা বহাল থাকেই। তবে  অবস্থা যদি এমন হয় যে স্ত্রী স্বামীর তুলনায় যথেষ্ট সম্পদশালী এবং তার ভরণপোষণ এর জন্য স্বামীর উপর নির্ভর করতে হয় না তাহলে স্ত্রী স্বামীর নিক্ট থেকে ভরণপোষণ দাবী নাও করতে পারেন। কিন্তু নাবালক সন্তানাদিরর ভরণপোষণ এর দায়িত্ব স্ত্রীর নয়। তাদের ভরণপোষণ এর জন্য পিতা অবশ্যই বাধ্য থাকে (২৭ ডিএলআর ২৭)।

ভরণপোষণ পেতে স্ত্রীর দায়িত্ব 

তবে এতক্ষণ স্ত্রীর যে ভরণপোষণ এর কথা বলা হল তা শর্তহীন নয়। স্ত্রীকে অবশ্যই স্বামীর প্রতি অনুগত থাকতে হবে। সমস্ত বৈধ সময়ে স্ত্রীর নিকট গমণ করার অধিকা স্বামীর জন্য অবাধ, অবারিত রাখতে হবে, তবেই স্ত্রী ভরণপোষণ এর অধিকারিণী হবেন। তবে সংগত কারণ থাকলে স্ত্রী স্বামীর সাথে বসবাস করতে অস্বীকার করতে পারেন এবং সেক্ষেত্রে ভরণপোষণ এর ডিক্রি পেতে পারেন। স্ত্রী তার আশু দেনমোহর দাবী করলে যতক্ষণ পর্যন্ত উক্ত দেনমোহর পরিশোধ করা না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রী আলাদা বসবাস করতে পারেন এবং এক্ষেত্রে পৃথকভাবে বসবাস করলেও স্বামী ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবেন। সাধারণ নিয়ম হলো অনিচ্ছুক স্ত্রীকে স্বামী ভরণপোষণ দিতে বাধ্য নয়। সংগত কারণ ব্যতিরেকে স্ত্রী যদি স্বামীর সাথে বসবাস করতে অস্বীকার করে তাহলে স্ত্রীকে অনিচ্ছুক বলা যায়। কোন আইনগত কারণ ব্যতিরেকে কোন স্ত্রী তার স্বামীর সাথে একত্রে বসবাস করতে অস্বীকার করলে কিংবা স্বামীকে পরিত্যাগ করলে কিংবা অন্য যেকোনো ভাবেই হোক স্ত্রী ইচ্ছাকৃতভাবে দাম্পত্য কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হলে স্বামীর নিকট হতে ভরণপোষণ গ্রহণের অধিকারিণী হবেন না এবং সেক্ষেত্রে স্বামী তার স্ত্রীর ভরণপোষণ না দিলে এটা বলা যাবে না যে স্বামী স্ত্রীর প্রতি অবহেলা করেছ বা স্ত্রীর ভরণপোষনে ব্যর্থ হয়েছে। [১৯৪৬ (২২৮) আইসি ১৯৮]

১৪ ডিএলআর ৪৬৫ তে আছে পরিস্থিতি এমনো হতে পারে যে, স্ত্রীকে স্বামী অবহেলাভরে স্ত্রীর পিত্রালয়ে ফেলে রাখেনি বা কোন নিষ্ঠুর আচরণ করেনি বরং স্ত্রীকে স্বামী তার নিজের ঘরে নেবার অনেকা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে তবে স্ত্রীকে অবশ্যই অনিচ্ছুক বলা যায় এবং অনিচ্ছুক স্ত্রী ভরণপোষণ পেতে হকদার নয়।

কোন স্ত্রী যদি তার উপর অর্পিত দাম্পত্য কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করে তাহলে স্ত্রী সর্বাবস্থায় স্বামীর নিকট থেকে ভরণপোষণ পেতে হকদার এমনকি স্ত্রী যথেষ্ট সম্পদশালী হলেও এই অধিকার থেকে সে বঞ্চিত হয়না। অপরদিকে এমন পরিস্থিতিতে স্বামী সব সময় স্ত্রীর ভরণপোষণ দিতে বাধ্য এমনকি স্বামী যতই দরিদ্র হোক না কেন।
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন নিচে মন্তব্যের ঘরে

১টি মন্তব্য

  1. আমর বয়স ১৮ বছর আমার আমাকে মিত্থে প্রতারনা করে বিয়ে দিয়েসে এখন আমার ইস্ত্রি দেন মহর দাবি করছে আমি জেহেতু নাবালক সেহেতু কি আমাকে দেন মহরের টাকা দিতে হবে
Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.