ডিভোর্স বা তালাক সৃষ্টিকর্তার নিকট যেমন নিকৃষ্টতম বৈধ কাজ, তেমনি আমাদের সমাজের মানুষের নিকটেও গর্হিত একটি কাজ। আমাদের সমাজে তালাকপ্রাপ্ত দম্পতি বিশেষ করে তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে আজও বাঁকা চোখে দেখা হয়। ডিভোর্স বা তালাক যদিও আমাদের সমাজে নিন্দনীয় একটি বিষয়, তথাপিও আমাদের সমাজে ডিভোর্সের সংখ্যা দিন দিন বহুগুণে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বর্তমানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি নিয়েও অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে অর্থাৎ অতি তুচ্ছ এবং নগণ্য কারণেও বর্তমান সমাজে অহরহ ডিভোর্স হচ্ছে। যাই হোক, ডিভোর্স নিন্দনীয় একটি কাজ হলেও পুরুষের জন্য ডিভোর্স আইনগত সুরক্ষা কবচ হিসেবে কাজ করে। আজকাল হরহামেশাই এটা ঘটতে দেখা যায় যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় দুজন আলাদা আলাদাভাবে বসবাস করতে থাকেন। দীর্ঘদিন ধরে আলাদাভাবে বসবাস করা সত্ত্বেও কোন পক্ষই ঘর- সংসার করার বা বিবাহ বিচ্ছেদের মতো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেন না। তাদের মধ্যে শুধুমাত্র কাগজে কলমে বৈবাহিক সম্পর্ক বিরাজমান থাকে। এতে করে আইনগতভাবে স্ত্রীরা তুলনামূলকভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও স্বামীদের ক্ষেত্রে এই আলাদা থাকাটা কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে।
একটু ব্যাখ্যা করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন নারীদেরকে কিছুটা সুরক্ষা দিলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে এই আইনটি কালো আইন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমানে অনেক নারী পুরুষকে ঘায়েল করার জন্য এই আইনটিকে মারাত্মক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এর সাথে আরও একটি আইন আছে সেটি হল যৌতুক আইন। এই দুইটি আইনের অপব্যবহার করে অনেক নারী পুরুষকে হয়রানি করতে পারেন। আইনজীবী হওয়ার সুবাদে বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে, এই দুই আইনের অধীনে যে মামলা হয় তার অধিকাংশই মিথ্যা মামলা এবং শুধুমাত্র পুরুষকে হয়রানি বা শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যেই এই আইন দুটিতে মামলা করা হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তারা দুজনে আলাদা আলাদাভাবে বসবাস করা কালীন স্ত্রী স্বামীকে শিক্ষা দেয়ার জন্য যৌতুকের মিথ্যা কাহিনী তৈরি করে যৌতুক আইন ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে থাকে। ফলে স্বামীকে মিথ্যা মামলায় নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়া পারিবারিক আদালতে দেনমোহর ও ভরণপোষণ এর মামলা করে স্বামীকে আর্থিকভাবে দুর্বল করার একটি প্রবণতা দেখা যায়। এসব মামলায় ফেঁসে গিয়ে একজন পুরুষ হতাশাপূর্ণ জীবন-যাপন করতে থাকে। এসব মিথ্যা মামলার হাত থেকে ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ একজন পুরুষকে সুরক্ষা দিতে পারে।
বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে আরেকটু পরিষ্কার করে নেয়া যাক। কাদের এবং সেলিনা এক বছর দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করার পর তুচ্ছ কারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এই মনোমালিন্যের জের ধরে সেলিনা কাদেরের ঘর ছেড়ে তার বাবার বাসায় চলে যায়। কাদের এবং সেলিনা আলাদাভাবে বসবাস করতে শুরু করে। অনেক চেষ্টা-তদবির করেও একজন আরেকজনের সাথে ঘর সংসার করতে রাজি নয় কিংবা কেউই প্রথমে ডিভোর্স দিতে রাজি নয়। কাদের ভাবে ডিভোর্স আমি দিব কেন পারলে সেলিনা আমাকে ডিভোর্স দিক। অন্যদিকে সেলিনা ভাবে আমি ডিভোর্স দিব না। ডিভোর্সের পদক্ষেপটা কাদেরই নিক। এভাবে দিন যায়, মাস যায়, এমনকি বছরও পার হয়ে যায় কিন্তু তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ টা আর হয় না। একদিন সেলিনা কিছু মানুষের শলাপরামর্শে কাদের কে শায়েস্তা করার জন্য কাদেরের বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের মামলা ঠুকে দেয় এবং পাশাপাশি দেনমোহর ও ভরণপোষণের জন্য পারিবারিক আদালতে কাদেরের বিরুদ্ধে একটি মোকদ্দমা দায়ের করে। যৌতুকের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা বের হলে পুলিশ কাদেরকে গ্রেফতারের জন্য কাদেরের গাড়িতে হানা দেয়। কাদের পুলিশের ভয়ে রাতে ঘরে শুতে পারে না। চাকরীতে যেতে পারে না। এভাবে কাদের নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়।
আমরা কেউই সংসার ভাঙ্গার পক্ষে নয়। কিন্তু যদি অনেক চেষ্টা, আলাপ-আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে কোন বৈবাহিক সম্পর্ক রক্ষা করা সম্ভব না হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে ডিভোর্স বা তালাক ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকে না।উপরোক্ত উদাহরণের ক্ষেত্রে কাদের সেলিনাকে ঘরে ফিরিয়ে আনার অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পরে নিশ্চিন্তে বসে না থেকে যদি সেলিনাকে ডিভোর্স দিয়ে দিত, তাহলে সেলিনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বা যৌতুক আইনে কাদেরের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য মামলা করতে পারত না। কারণ বিয়ে বলবৎ না থাকলে যৌতুক দাবি করার প্রশ্ন ওঠে না। তাই যৌতুকের মামলা ও করা যায় না। অপরদিকে তালাক দেওয়ার পরে আইন মোতাবেক সেলিনা শুধুমাত্র দেনমোহর ও ইদ্দতকালীন সময়ের ভরণপোষণের টাকা পেতে হকদার। কাজেই সংসার করা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ডিভোর্স বা তালাক দিলে একজন পুরুষ এসব মিথ্যা মামলা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন
আপনি কি আমাদের ব্লগে লিখতে আগ্রহী? তাহলে এখানে নিবন্ধন করুন।
একটু ব্যাখ্যা করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ২০০০ সনের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন নারীদেরকে কিছুটা সুরক্ষা দিলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে এই আইনটি কালো আইন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমানে অনেক নারী পুরুষকে ঘায়েল করার জন্য এই আইনটিকে মারাত্মক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। এর সাথে আরও একটি আইন আছে সেটি হল যৌতুক আইন। এই দুইটি আইনের অপব্যবহার করে অনেক নারী পুরুষকে হয়রানি করতে পারেন। আইনজীবী হওয়ার সুবাদে বাস্তব অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে, এই দুই আইনের অধীনে যে মামলা হয় তার অধিকাংশই মিথ্যা মামলা এবং শুধুমাত্র পুরুষকে হয়রানি বা শায়েস্তা করার উদ্দেশ্যেই এই আইন দুটিতে মামলা করা হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় তারা দুজনে আলাদা আলাদাভাবে বসবাস করা কালীন স্ত্রী স্বামীকে শিক্ষা দেয়ার জন্য যৌতুকের মিথ্যা কাহিনী তৈরি করে যৌতুক আইন ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করে থাকে। ফলে স্বামীকে মিথ্যা মামলায় নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। এছাড়া পারিবারিক আদালতে দেনমোহর ও ভরণপোষণ এর মামলা করে স্বামীকে আর্থিকভাবে দুর্বল করার একটি প্রবণতা দেখা যায়। এসব মামলায় ফেঁসে গিয়ে একজন পুরুষ হতাশাপূর্ণ জীবন-যাপন করতে থাকে। এসব মিথ্যা মামলার হাত থেকে ডিভোর্স বা বিবাহ বিচ্ছেদ একজন পুরুষকে সুরক্ষা দিতে পারে।
বিষয়টি একটি উদাহরণের মাধ্যমে আরেকটু পরিষ্কার করে নেয়া যাক। কাদের এবং সেলিনা এক বছর দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করার পর তুচ্ছ কারণে তাদের মধ্যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। এই মনোমালিন্যের জের ধরে সেলিনা কাদেরের ঘর ছেড়ে তার বাবার বাসায় চলে যায়। কাদের এবং সেলিনা আলাদাভাবে বসবাস করতে শুরু করে। অনেক চেষ্টা-তদবির করেও একজন আরেকজনের সাথে ঘর সংসার করতে রাজি নয় কিংবা কেউই প্রথমে ডিভোর্স দিতে রাজি নয়। কাদের ভাবে ডিভোর্স আমি দিব কেন পারলে সেলিনা আমাকে ডিভোর্স দিক। অন্যদিকে সেলিনা ভাবে আমি ডিভোর্স দিব না। ডিভোর্সের পদক্ষেপটা কাদেরই নিক। এভাবে দিন যায়, মাস যায়, এমনকি বছরও পার হয়ে যায় কিন্তু তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ টা আর হয় না। একদিন সেলিনা কিছু মানুষের শলাপরামর্শে কাদের কে শায়েস্তা করার জন্য কাদেরের বিরুদ্ধে আদালতে যৌতুকের মামলা ঠুকে দেয় এবং পাশাপাশি দেনমোহর ও ভরণপোষণের জন্য পারিবারিক আদালতে কাদেরের বিরুদ্ধে একটি মোকদ্দমা দায়ের করে। যৌতুকের মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা বের হলে পুলিশ কাদেরকে গ্রেফতারের জন্য কাদেরের গাড়িতে হানা দেয়। কাদের পুলিশের ভয়ে রাতে ঘরে শুতে পারে না। চাকরীতে যেতে পারে না। এভাবে কাদের নানাভাবে হয়রানির শিকার হয়।
আমরা কেউই সংসার ভাঙ্গার পক্ষে নয়। কিন্তু যদি অনেক চেষ্টা, আলাপ-আলোচনা ইত্যাদির মাধ্যমে কোন বৈবাহিক সম্পর্ক রক্ষা করা সম্ভব না হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে ডিভোর্স বা তালাক ছাড়া বিকল্প কোনো উপায় থাকে না।উপরোক্ত উদাহরণের ক্ষেত্রে কাদের সেলিনাকে ঘরে ফিরিয়ে আনার অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পরে নিশ্চিন্তে বসে না থেকে যদি সেলিনাকে ডিভোর্স দিয়ে দিত, তাহলে সেলিনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বা যৌতুক আইনে কাদেরের বিরুদ্ধে যৌতুকের জন্য মামলা করতে পারত না। কারণ বিয়ে বলবৎ না থাকলে যৌতুক দাবি করার প্রশ্ন ওঠে না। তাই যৌতুকের মামলা ও করা যায় না। অপরদিকে তালাক দেওয়ার পরে আইন মোতাবেক সেলিনা শুধুমাত্র দেনমোহর ও ইদ্দতকালীন সময়ের ভরণপোষণের টাকা পেতে হকদার। কাজেই সংসার করা যদি সম্ভব না হয়, তাহলে ডিভোর্স বা তালাক দিলে একজন পুরুষ এসব মিথ্যা মামলা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন
আপনি কি আমাদের ব্লগে লিখতে আগ্রহী? তাহলে এখানে নিবন্ধন করুন।
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন নিচে মন্তব্যের ঘরে।