মিথ্যা বিবাহের মাধ্যমে কোন নারীর সাথে সহবাসের শাস্তি

নারীরা সৃষ্টিগতভাবেই বেশি আবেগপূর্ণ। আর পুরুষ সমাজ এই আবেগ নামক অস্ত্রটি ব্যবহার করে নারীদের ঘায়েল করে। নারী মন আবেগের দোলনায় নিজেকে দুলিয়ে সর্বনাশের খাতায় নাম লেখান। প্রতিনিয়ত শত শত নারী পুরুষের প্রলোভনে পড়ে নিজের সর্বস্ব খুয়াচ্ছেন। আইন না জানার কারণে প্রতারিত হয়েও নারীরা আইনি কোন পদক্ষেপ নিতে পারেন না।

অনেক পুরুষ আছেন যাদের উদ্দেশ্যই হলো নারীর শরীরকে ব্যবহার করা। ছলেবলে কৌশলে নারীকে কাবু করে তারা নারীদের সহিত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে নারীকে ছুড়ে ফেলে দেন নোংরা বস্তুর মত করে। নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে এসব পুরষ পবিত্র কোরআন ছুয়ে প্রতিজ্ঞা করতেও পিছ পা হন না। ফলে নারী মন সহজেই কাবু হয়ে যায়। ধরা দেয় নোংরা পুরুষের নোংরামীর জালে। মিথ্যা বিয়ে, বিয়ে বিয়ে খেলা, বিয়ের মিথ্যা প্রলোভন, প্রতিশ্রুতি ইত্যাদির মাধ্যমে অনেক নারীর ইজ্জত নষ্ট করা হচ্ছে। এই সব পুরুষদের জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা থাকলেও আমরা সঠিক আইন না জানার কারণে সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারিনা।


বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৪৯৩ ধারায় বলা হয়েছে যে, কোন পুরুষ যদি কোন নারীর মনে এই মর্মে বিশ্বাস জন্মায় যে, উক্ত নারীর সহিত সেই ব্যক্তির বৈধ বিবাহ হয়েছে অথচ সেই ব্যক্তি জানেন যে উক্ত নারীর সহিত বৈধ বিবাহ সম্পন্ন হয়নি বং উক্ত মিথ্যা বিয়ের মাধ্যমে যদি সেই ব্যক্তি উক্ত নারীর সহিত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে তাহলে উক্ত ব্যক্তি দশ বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবে এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবে।

একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার করে নেয়া যাক। মোখলেছ এবং তাসলিমা দুজন দুজনকে ভালোবাসে। মোখলেস অনেকবার চেষ্টা করেছে তাসলিমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার জন্য। কিন্তু তাসলিমা বিয়ের আগে কোনো ধরনের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে নারাজ। মোখলেস তাসলিমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তাসলিমা রাজি  হয়। পূর্ব পরিকল্পনা মতে মোখলেস ও তাসলিমার মধ্যে একটি হোটেলে বিয়ে সম্পন্ন হয়। উক্ত বিয়েতে মোখলেস দুইজন ভুয়া সাক্ষী, একজন ভুয়া মাওলানা এবং একজন ভুয়া বিবাহ রেজিস্ট্রার কে সাথে নিয়ে আসে। মোখলেছ তাদেরকে টাকা দিয়ে ভাড়া করে আনে। ভুয়া কাবিননামা দিয়ে বিবাহ রেজিস্ট্রি করা হয় করে এবং স্বাক্ষী, মাওলানা এবং কাজী যে আসলে ভুয়া এটা তাসলিমা কল্পনাতেও ভাবেনি। এই সাজানো বিয়েটাকে সত্য মনে করে তাসলিমা মোখলেসের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সম্মত হয়। এভাবে কয়েক মাস স্বামী-স্ত্রীর মতো শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করায় তসলিমার গর্ভে মোখলেসের সন্তান জন্ম নেয়। বিষয়টি তাসলিমা মোখলেস কে জানালে মোখলেস ঐ সন্তান অস্বীকার করে এবং বিয়েও অস্বীকার করে। মোখলেস জানাই যে তাদের মধ্যে কখনো বিয়েই সম্পন্ন হয়নি। মোখলেসের মুখে এমন কথা শুনে তাসলিমা দিশেহারা হয়ে পড়ে।

উপরোক্ত উদাহরণ থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে, তাসলিমা এবং মোখলেসের মধ্যকার বিয়ে আসলে কোন বৈধ বিয়ে ছিল না। পুরোটাই একটা সাজানো নাটক ছিল। কিন্তু বিষয়টি তাসলিমার জানা ছিল না। মোখলেস এরকম সাজানো বিয়ের নাটক করে তাসলিমার মনে এই বিশ্বাস জন্মেছে যে, তাদের মধ্যে আসলেই বৈধ বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে এবং তারা এখন স্বামী-স্ত্রী। এভাবে কোন ব্যক্তি যদি বৈধ বিবাহ না হওয়া সত্বেও কোন নারীর মনে বৈধ বিয়ে হয়েছে মর্মে বিশ্বাস জন্মায় এবং ঐ নারীর সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন তাহলে উক্ত ব্যক্তি ৪৯৩ ধারার অপরাধ করেছে বলে ধরে নেওয়া হবে। উক্ত ধারার অপরাধ জামিন-অযোগ্য এবং আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে আপোসযোগ্য। ভুক্তভোগী নারী থানায় কিংবা আদালতে প্রতিকার চেয়ে মামলা দায়ের করতে পারবেন।

   আপনি কি আমাদের ব্লগে লিখতে আগ্রহী? তাহলে এখানে নিবন্ধন করুন।
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন নিচে মন্তব্যের ঘরে

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.