Search Suggest

দুনিয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়ে সম্পত্তির বন্টন শিখুন (পর্ব-২)

মৃতের সম্পত্তি থেকে কে কতটুকু অংশ পাবেন

আজ আমরা খুব সহজে শিখবো মৃত ব্যক্তির রেখে যাওয়া সম্পত্তি থেকে কে কত টুকু অংশ পাবেন। প্রথম পর্বে আমরা শিখেছিলাম কোরআনিক শেয়ার কারা এবং কাদেরকে কখনো উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না। মৃতের সম্পত্তি বন্টনের সময় বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে একজন ওয়ারিশের প্রাপ্য অংশের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটে অর্থাৎ একজনের উপস্থিতিতি বা অনুপস্থিতিতে  আরেকজনের অংশের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটে বা সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার থেকে একজন সম্পূর্ণরূপে বঞ্চিত হতে পারেন আবার একজন সম্পত্তি পাওয়ার অধিকার অর্জন করতে পারেন। এই অবস্থাগুলো আজ আমরা আলোচনা করবো। সম্পত্তি বন্টনের পূর্বে অবশ্যই একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, সম্পত্তি বন্টনের সময় সবার আগে কোরআনিক অংশীদারদেরকে আগে সম্পত্তি দিতে হবে। তারপর অবশিষ্ট সম্পত্তি অবশিষ্টটভোগীদের মধ্যে ভাগ করে দিতে হবে।

মৃত ব্যক্তির একজন ওয়ারিশ কোন অবস্থার প্রেক্ষিতে কতটুকু সম্পত্তির মালিক হবেন তা খুব সহজ ভাষায় নিচে তুকে ধরা হলো-
১। স্ত্রী দুই ধরণের অবস্থার মুখোমুখি হন। যেমন-
(ক) মৃত্যু ব্যাক্তির সন্তান না থাকলে ১/৪ অংশ পাবেন।

( খ) আর থাকলে ১/৮ অংশ পাবেন।

উল্লেখ্য যে, একাধিক স্ত্রী জীবিত থাকলেও সবাই মিলে এক স্ত্রীর প্র‍্যাপ্য অংশ পাবেন এবং এক স্ত্রীর প্র‍্যাপ্য অংশ সবাই নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নিবেন।
২। স্বামীর ক্ষেত্রেও দুই অবস্থা দেখা যায়। যেমন- 
(ক) স্ত্রীর মৃত্যুর পর সন্তান না থাকলে ১/২ অংশ পাবেন।
( খ) আর থাকলে ১/৪ অংশ পাবেন।

৩। কন্যার ক্ষেত্রে আমরা তিন অবস্থা দেখতে পাই। যেমন-
(ক) একজন মাত্র কন্যা থাকলে ১/২  অংশ,

( খ) একাধিক থাকলে ২/৩ অংশ পাবেন,

(গ) পুত্র কন্যা একসাথে থাকলে ২:১ অনুপাতে পাবেন।

৪। পিতার ক্ষেত্রেও তিন অবস্থা বিরাজমান। যেমন-
(ক) মৃত্যু ব্যাক্তির পুত্র বা পৌত্র বা পুরুষ শ্রেনী
বর্তমানে থাকলে ১/৬ অংশ পাবেন,

(খ) পুরুষ শ্রেনি না থাকলে এবং কন্যা বা পৌত্রী বা
মহিলা শ্রেনী বর্তমানে থাকলে( ১/৬+অবশিষ্ট) অংশ
পাবেন,

(গ)পুরুষ বা মহিলা শ্রেনী বর্তমানে না থাকলে অবশিষ্ট
সকল অংশ পাবেন।


৫। মায়ের তিন অবস্থা দেখা যায়। যেমন-
(ক) মৃত্যু ব্যক্তির সন্তান বা একাধিক ভাইবোন থাকলে
১/৬ অংশ পাবেন,

(খ) মৃত্যু ব্যক্তির যদি কোন সন্তান না থাকে বা
ভাইবোন ২ জনের কম থাকলে ১/৩ অংশ পাবেন,

(গ) স্বামী বা স্ত্রীর সাথে পিতা মাতা উভয়ে থাকলে ,
মৃত্যু ব্যক্তির সম্পত্তি থেকে স্বামী বা স্ত্রীর অংশ
দেয়ার পর বাকি সম্পত্তির ১/৩ অংশ পাবেন।

৬। বৈপিত্রীয় ভাইবোনরা তিন অবস্থায় সম্পত্তি পান। যেমন-
(ক) একজন মাত্র বৈপিত্রীয় ভাইবোন থাকলে ১/৬ অংশ,

(খ) একাধিক থাকলে ১/৩ অংশ,

(গ) মৃত্যু ব্যাক্তির পুত্র বা পৌত্র,পিতা বা দাদা থাকলে
বঞ্ছিত হবেন।

৭। পৌত্রীগনের ছয় অবস্থায় সম্পত্তির হ্রাস বৃদ্ধি দেখা যায়। যেমন-
(ক) একজন মাত্র পৌত্রী থাকলে ১/২,

( খ) একাধিক থাকলে ২/৩ অংশ পাবেন,

(গ) যদি মৃত্যু ব্যক্তির একজন মাত্র কন্যা থাকে তাহলে
পৌত্রীগন ১/৬ অংশ পাবেন,

(ঘ) যদি মৃত্যু ব্যক্তির একাধিক কন্যা থাকে তাহলে
পৌত্রীগন বঞ্ছিত হবেন,

(ঙ) মৃত্যু ব্যক্তির পৌত্রী ও পৌত্র একই সাথে থাকলে
অংশীদার হবেন,

(চ) যদি মৃত্যু ব্যক্তির পুত্র থাকে তাহলে পৌত্রীগন
বঞ্ছিত হবেন।

৮। সহোদরা বোন বা আপন বোনের ক্ষেত্রে পাঁচ অবস্থা বিরাজমান। যেমন-
(ক) একজন মাত্র সহোদরা বোন থাকলে ১/২ অংশ,

( খ) একাধিক থাকলে ২/৩ অংশ পাবেন,

(গ) সহোদরা বোনের সাথে সহোদরা ভাই থাকলে
অবশিষ্টভোগী হবেন,

(ঘ) যদি মৃত্যু ব্যক্তির একজন মাত্র কন্যা বা পৌত্রী
থাকে তাহলে সহোদরা বোনগন ১/৬ অংশ পাবেন।
একাধিক কন্যা বা পৌত্রী থাকলে এবং অন্য কোন
ওয়ারিশ না থাকলে অংশীদার হবেন,

(ঙ) মৃত্যু ব্যাক্তির পুরুষ শ্রেনীর ওয়ারিশ থাকলে
সহোদরা বোনগন বঞ্ছিত হবেন।

৯। বৈমাত্রিয় বোনদের সাত অবস্থা বিরাজমান। যেমন-
(ক) যদি মৃত্যু ব্যাক্তির সহোদরা বোন না থাকে ও
একজন মাত্র বৈমাত্রিয় বোন থাকলে ১/২ অংশ,

(খ)একাধিক থাকলে ২/৩ অংশ পাবেন,

(গ) যদি মৃত্যু ব্যক্তির একজন মাত্র সহোদরা বোন থাকে
তাহলে বৈমাত্রিয় বোন ১/৬ অংশ পাবেন,

(ঘ) যদি মৃত্যু ব্যক্তির একাধিক সহোদরা বোন থাকে
তাহলে বৈমাত্রিয় বোনগণ বঞ্ছিত হবেন,

(ঙ)যদি মৃত্যু ব্যক্তির একাধিক সহোদরা বোন থাকে
এবং বৈমাত্রিয় বোনের সাথে বৈমাত্রিয় ভাই থাকলে
একএে অংশীদার হবেন,

(চ) মৃত্যু ব্যাক্তির কন্যা বা পৌত্রী থাকলে এবং অন্য
কোন ওয়ারিশ না থাকলে বৈমাত্রিয় বোনগণ অবশিষ্ট
অংশ পাবেন,

(ছ) মৃত্যু ব্যক্তির পুরুষ ওয়ারিশ থাকলে বৈমাত্রিয়
বোনগন বঞ্ছিত হবেন।

১০। দাদী বা নানীর ২ অবস্থা বিরাজমান। যেমন-
(ক) পিতৃ বা মাতৃ সম্পর্কের এক বা একাধিক যাহাই হোক
১/৬ অংশ পাবেন,

(খ) মৃত্যু ব্যক্তির মাতা জীবিত থাকলে নানী বঞ্ছিত হবেন,
তবে পিতা জীবিত থাকলে দাদী বঞ্ছিত হবেন।
আপনি কি আমাদের ব্লগে লিখতে আগ্রহী? তাহলে এখানে নিবন্ধন করুন।
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন নিচে মন্তব্যের ঘরে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন