মৃত্যুর সনদপত্র দিতে ডাক্তারকে বাধ্য করা যায় কিনা

কবর দিয়ে কিংবা শব দাহ অথবা অন্যকোন আইনানুগভাবে মৃতদেহের সৎকার করার জন্য মৃত্যুর সনদপত্রে মৃত্যুর কারণ এবং মৃতের পরিচয় থাকা প্রয়োজনীয়। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিজে সম্পন্ন অবহিত না হওয়া পর্যন্ত কোন চিকিৎসকের মৃত্যু সার্টিফিকেট প্রদান করা উচিত নয়। সন্দেহজনক মৃত্যুর বিষয় হাতে আসলে চিকিৎসকের উচিত সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের কাছে বিষয়টি রিপোর্ট করা। কারন পরে যদি প্রমাণিত হয় যে, উদ্দেশ্যমূলকভাবে লোকটিকে মারা হয়েছে তাহলে মৃত্যুর সার্টিফিকেট প্রদানকারী চিকিৎসকের উক্ত অপরাধের সাহায্যকারী হিসেবে অভিযুক্ত হওয়ার বিপদ রয়েছে। তাছাড়া পরিসংখ্যানের জন্যও সঠিকভাবে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন।

যখন চিকিৎসক মৃত্যু সনদ দিতে বাধ্য

যখন কোনো চিকিৎসকের কাছে কোন ব্যক্তি শেষ চিকিৎসা পাবার পর মারা যান, তখন চিকিৎসক তার মৃত্যুর সার্টিফিকেট দিতে বাধ্য এবং তার মতে মৃত্যুর কারণ কী তা তিনি বলে দিতে বাধ্য। তিনি এ ব্যাপারে বিলম্ব না করেই এবং কোনো ফি ছাড়াই মৃত্যুর সনদপত্র প্রদান করবেন। এক্ষেত্রে যদি মৃত ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য টাকা পাওনাও থাকে তাহলেও মৃত্যুর সার্টিফিকেট দিতে হবে। তবে প্রাপ্য টাকা মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীদের কাছ থেকে পাবার জন্য তিনি আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন।


যখন চিকিৎসক মৃত্যু সনদ দিতে অস্বীকার করতে পারেন

কোন মেডিকেল প্র্যাকটিশনার মৃত্যুর সনদপত্র দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন যদি তিনি মৃত্যুর কারণ সম্বন্ধে তিনি নিশ্চিত না হন। যেমন হঠাৎ অপ্রত্যাশিত মৃত্যু কিংবা যে ক্ষেত্রে চিকিৎসককে প্রথমবারের মতো তাড়াহুড়া করে একজন রোগী দেখতে আনার পর চিকিৎসক দেখলেন রোগী মৃত, কিংবা যেখানে চিকিৎসকের সন্দেহ হচ্ছে যে, মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা চাপা দেবার চেষ্টা চলছে, কিংবা কোনো ষড়যন্ত্র আছে -এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসক পুলিশকে খবর দেবেন যাতে করে মৃতদেহ সমাধিস্ত বা সৎকার করার পূর্বে মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়। চিকিৎসক আরও পুলিশকে খবর দিবেন- অস্বাভাবিক মৃত্যু, সংঘর্ষ জনিত মৃত্যু, ঔষধ , বিশ বা  অনাহার কিংবা অবহেলাজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে। মৃত্যুর সময় নিজে উপস্থিত না থাকলে চিকিৎসক মৃত্যু সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন।

এছাড়া সার্টিফিকেটের প্রতিকল্প দেবার সময় প্রতিকল্প শব্দটির উল্লেখ করে দেয়া উচিত। অনেক সময় সিভিল সার্জন বা সিনিয়র মেডিকেল অফিসার কে মৃত্যুর সার্টিফিকেটে প্রতিস্বাক্ষর করতে বলা হয়। কিন্তু মৃতদেহ না দেখিয়ে তাদের প্রতি স্বাক্ষর করা উচিত নয়। তাতে তিনি নিজেই বিপদে পড়তে পারেন। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে চিকিৎসকের মনে কোনোরূপ সন্দেহ সংশয় থাকলে তিনি মৃত্যু সনদ দিবেননা। মৃত্যু সম্পর্কে পুরোপুরি নিশ্চিত হলেই কেবলমাত্র তিনি মৃত্যু সনদ প্রদান করতে পারেন। চিকিৎসককে অবশ্যই এ কথা মনে রাখতে হবে যে, মৃত্যু সনদের জন্য চিকিৎসকই দায়ী থাকবেন। তাই কারো চাপে বা প্ররোচনায় বা লোভে পড়ে মৃত্যু সনদ ইস্যু করলে পরবর্তীতে ওই চিকিৎসক অপরাধে ফেঁসে যেতে পারেন। তবে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে চিকিৎসক নিশ্চিত হলে তিনি মৃতের উত্তরাধিকারীগণ কে মৃত্যু সনদ দিতে আইনত বাধ্য।
আপনি কি আমাদের ব্লগে লিখতে আগ্রহী? তাহলে এখানে নিবন্ধন করুন।
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন নিচে মন্তব্যের ঘরে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Cookie Consent
We serve cookies on this site to analyze traffic, remember your preferences, and optimize your experience.
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.