সীমিত দায় সম্পন্ন কোম্পানীর সংঘ স্মারক
সঙ্ঘ স্মারক হলো একটি কোম্পানির সংবিধান। একটি কোম্পানীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি অর্থাৎ কোন উদ্দেশ্যে কোম্পানীটি গঠন করা হচ্ছে, সদস্যদের দায় কেমন, কতসংখ্যক শেয়ার মূলধন নিয়ে কোম্পানী গঠিত হতে যাচ্ছে ইত্যাদি বিষয় সঙ্ঘ স্মারকে বিস্তারিত উল্লেখ থাকে।সীমিত দায় সম্পন্ন কোম্পানীর সংঘস্মারকে কোন কোন বিষয়গুলো উল্লেখ থাকবে তা কোম্পানি আইন ১৯৯৪ এর ৬ ধারায় বর্ণনা করা হয়েছে। ৬ ধারার বিধানমতে সীমিত দায় সম্পন্ন কোম্পানীর ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো উল্লেখ থাকতে হবে-
১। কোম্পানীর নাম, যাহার শেষে “সীমিতদায়” বা “লিমিটেড” শব্দটি লিখিত থাকবে;
২। নিবন্ধিকৃত কার্যালয়ের ঠিকানা;
৩। কোম্পানীর উদ্দেশ্যসমূহ এবং বাণিজ্যিক (Trading) কোম্পানী ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে, যে সকল এলাকায় উহার উদ্দেশ্য ও কার্যাবলী পরিব্যাপ্ত থাকবে উহার উল্লেখ;
৪। সদস্যগণের দায় শেয়ার দ্বারা সীমিত, এই মর্মে একটি বিবৃতি; এবং
৫। যে শেয়ার-মূলধন (share capital) লইয়া কোম্পানী নিবন্ধিকৃত হওয়ার প্রস্তাব করছে, টাকার অংকে উহার পরিমাণ এবং সে অনুসারে নির্দিষ্ট সংখ্যক শেয়ারে উক্ত মূলধনের বিভাজন;
এছাড়া-
১। সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তির অন্যুন একটি শেয়ার থাকিবে; এবং
২। সংঘস্মারকে স্বাক্ষরকারী প্রত্যেক ব্যক্তি তার নামের বিপরীতে তৎকর্তৃক গৃহীত শেয়ার সংখ্যা উল্লেখ করবেন৷
এ সম্পর্কিত কতিপয় মামলার সিদ্ধান্ত
১৯১৮ এসি ৫১৪ মামলার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে যে, সংঘস্মারক কে কোম্পানীর সংবিধান হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। মূল দলিল বা সনদকে যৌথ মূলধনী কারবারের ক্রোড়পত্র বলা যেতে পারে। কোম্পানী গঠনের উদ্দেশ্য ও কার্যাবলি সম্পর্কিত মৌলিক বিধানসমূহ এতে লিপিবদ্ধ থাকে। কোম্পানীর শেয়ার হোল্ডার, পাওনাদার এবং কোম্পানীর সহিত লেনদেনকারীগণকে কোম্পানীর অনুমোদিত উদ্যোগের আওতায় সম্পর্কে অবহিত করা এই দলিলের প্রধান উদ্দেশ্য।এছাড়া ১৯০৫ সি এইচ ৪২৭ মামলার সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে যে, মেমোরেন্ডাম গঠনের সময় এমন ধরনের শব্দাবলী প্রয়োগ ও ব্যবহার করা উচিত যেন অসচেতন ব্যক্তিদের সমস্যায় পর্যবসিত হতে না হয় অর্থাৎ এই দলিলে কোন প্রকার সাহিত্যের প্রকাশ না ঘটিয়ে কোম্পানীর উদ্দেশ্যাবলীর সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করে সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় তা প্রণয়ন করা উচিত।
প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে লিমিটেড শব্দটি লেখা বাঞ্ছনীয়। কোম্পানির নামের শেষে লিমিটেড শব্দটি ব্যবহার করার উদ্দেশ্য হলো, যারা কোম্পানির সাথে কারবারে লিপ্ত হয়েছেন তারা যেন সুস্পষ্ট ভাবে বুঝতে সক্ষম হন যে কোম্পানির সদস্যদের দায় সীমাবদ্ধ। তবে কলা, বিজ্ঞান, ধর্ম বা দাতব্য ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নকল্পে প্রতিষ্ঠিত অব্যবসায়ী কোম্পানীর ক্ষেত্রে লিমিটেড শব্দ লেখা আবশ্যক নয় যদি এই মর্মে সরকার হতে কোন অনুমতি লাভ করা হয়।
আপনি কি আমাদের ব্লগে লিখতে আগ্রহী? তাহলে এখানে নিবন্ধন করুন।
আপনার কি কিছু বলার ছিল? তাহলে লিখুন নিচে মন্তব্যের ঘরে।