Search Suggest

বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার-রিমান্ড : আইন ও রায়ের তুলনামূলক প্রতিবেদন দাখিল করল রাষ্ট্রপক্ষ



ফৌজদারি কার্যবিধির বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার (৫৪ ধারা) ও জিজ্ঞাসাবাদের ধারা (১৬৭ ধারা) প্রয়োগে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের সুপারিশ ও বিদ্যমান আইনে কী আছে, সে বিষয়ে তুলনামূলক চিত্র প্রতিবেদন আকারে আপিল বিভাগে দাখিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

আজ বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন তুলনামূলক প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত আজ নয় (নট টু ডে) বলে আদেশ দেন। এ অবস্থায় ওই দুটি ধারা প্রয়োগের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদালতের দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর আগামী বৃহস্পতিবার শুনানি হতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যার্টনি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন তুলনামূলক প্রতিবেদনটি দাখিল করেন, সঙ্গে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার। অন্যদিকে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল, জেড আই খান পান্না, অনীক আর হক, মো. শাহীনুজ্জামান ও এ এম জামিউল হক।

ক্রম অনুসারে আজ বিষয়টি উঠলে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, বিদ্যামান আইনে কী আছে, রায়ের সুপারিশে কী আছে, তার তুলনামূলক একটি চিত্র দেখানো হবে।

আদালত বলেন, ‘প্রস্তুত করেছেন।’ তখন অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘তৈরি করেছি, আইন ও সুপারিশে কী আছে, তা পাশাপাশি রেখেছি।’

আদালত বলেন, ‘তাহলে দাখিল করেন, আমরা দেখি।’ পরে প্রতিবেদনটি দাখিল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। এরপর আদালত বলেন, ‘নট টু ডে।’

মামলার প্রেক্ষাপট

দুই যুগ আগে ১৯৯৮ সালে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তারের পর ওই বছরের ২৩ জুলাই মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনার পর বিচারপতি হাবিবুর রহমান খানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। কমিটি ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের পক্ষে কয়েকটি সুপারিশ করে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টসহ (ব্লাস্ট) অন্যরা হাইকোর্টে রিট করে।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এ বিষয়ে কয়েক দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন। এ রায়ে ৬ মাসের মধ্যে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ও হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধি সংশোধন করার পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা অনুসরণ করতে বলা হয়।

ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের ওপর ২০১৬ সালের ২৪ মে আপিল বিভাগ রায় দেন। আপিল বিভাগ ওই দুই ধারা প্রয়োগ বিষয়ে কয়েক দফা সুপারিশ ও গাইডলাইন দেওয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে রায় দেন।

রায়ে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য ১০ দফা এবং অভিযোগ আমলে নেওয়ার বিষয়ে ম্যাজিস্ট্রেট, বিচারক ও ট্রাইব্যুনালের প্রতি ৯ দফা গাইডলাইন দেওয়া হয়।

২০১৬ সালের ২৪ মে এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। এর ধারাবাহিকতায় ৬ জানুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতুবি করেন। আগের ধারাবাহিকতায় আজ বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে।

এ বিষয়ে গত ৬ জানুয়ারি অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছিলেন, রায়ের কিছু নির্দেশনা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, যা আদালতে উপস্থাপন করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ আইনগত ব্যাখ্যা জড়িত থাকায় আরও প্রস্তুতির জন্য সময় চাওয়া হয়েছে।



إرسال تعليق